ভোলায় স্ত্রীকে মাথায় কেরোসিন তেল ঢেলে দিয়ে হত্যার চেষ্টা

স্টাফ রিপোর্টার।

ভোলা সদর পৌর কাঠালী ৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ আলম মিয়া’র অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ে ইসরাত জাহান মিমকে, গত ৬ মে ২০২২ ইং তারিখে ভোলার উপশহর বাংলাবাজার এলাকায় বিবাহ দেওয়ার চূড়ান্ত কথাবার্তা হয়। সেই দিন মিমের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান আমার বাসায় হয়। রাত ৪ টার দিকে মিমকে বাসায় হঠাৎ না দেখে মিমের মা খোঁজাখুজি করেও পাচ্ছে না। সে সময় আমার স্ত্রী সেলিনা আক্তার আমাকে বলে ভোলা সদর উপজেলার আলিনগর ইউনিয়ন ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা, হুমায়ুন কবিরের ছেলে খাদিমুল ইসলাম রমিজের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সম্পর্ক হয় মিমের সাথে। প্রায় সময় তমিজ মিমকে আমরা অন্য জায়গায় বিবাহ দিলে, তুলে নিয়ে যাবে বলে প্রায় সময় এই ধরনের কথাবার্তা বলতেন। গায়ে হলুদের রাত্রে মিমের চাচাতো বোনের তমিজ পরিচয় গোপন করে, মিমের কলেজ ফ্রেন্ড পরিচয় দিয়ে মিমের সাথে একটু কথা আছে একথা বললে মিমের বোনকে দিয়ে ডেকে এনে তারা দুজন কথা বলেন। এক পর্যায়ে তমিজ জিম্বি করে মিমকে তুলে নিয়ে যায়। আলম আরও বলেন, আমরা তমিজের বাবা মায়ের সাথে মিমকে আনার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করি। আলোম ও তার স্ত্রী সেলিনা আক্তার কে ওই মুহূর্তরে কোন আইনি ব্যবস্থা নেন কে, একটা জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেন, আমার মেয়ের সন্ধান না পেলে এসে না আইনি ব্যবস্থা নিতাম, তো তমিজের বাবা-মা তো স্বীকার করেছে তাদের আওতায় আমার মেয়ে মিম আছে। জুলাই মাসের ১৮/৯/২০২২ ইং তারিখে মিমের সন্ধান পাওয়া যায়, তমিজ তাকে বরিশাল নিয়ে রেখেছে তার বড় বোনের বাসায়।

সেই ১৮ জুলাই বরিশাল থেকে মিমকে নিয়ে আসে ভোলা সদর উপজেলার আলিনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির তমিজের বাবার বাড়িতে।
তারা বিভিন্ন তালবাহানা দেখিয়ে আমাদের মান সম্মান ভোলা শহরে বিলিয়ে দিবে বলে কয়েকদিন আমাদেরকে ভয় ভীতি দেখিয়ে রাখেন। তারপর একপর্যায়ে হুমায়ুন কবিরের ছেলে, মোঃ খাদিমুল ইসলাম ওরফে তমিজ ও ইসরাত জাহান মিমের বিষয়টি স্থানীয়ভাবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে বিষয়টি সার্লিস মীমাংসা করে মুসলিম শরা মোতাবেক ৬ লাখ টাকা দেনমোহরে রেজিস্ট্রেশনে দুই পক্ষের উপস্থিতিতে বিবাহ সু-সম্পন্ন হয়।

এ ব্যাপারে গত ১৭/ ৫/২০২৩ ইং তারিখে ঘটনাস্থলে গিয়ে, ভুক্তভোগী ইসরাত জাহান মিমের সাথে কথা তিনি বলেন, আমার স্বামী খাদিমুল ইসলাম (তমিজ) উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে পাঠানোর কথা বলেন। আমার শ্বশুর ও শাশুড়ি বলেন এখানে অনেক টাকার প্রয়োজন, তারপর আমার স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি মিলে আমাকে বলে তোমার বাবা-মায়ের কাছ থেকে, ১০ লাখ টাকা এনে দাও। এ ব্যাপারে আমার মায়ের সাথে আমার শ্বশুর শাশুড়ি ও আমি সহ যোগাযোগ করে, ১০ লাখ টাকার কথা জানালে তারা ৫ লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলেন। তার কিছুদিন পর আমার শ্বশুর ৫ লাখ আমাদের বাড়িতে এসে আমার বাবা-মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে যান। এর কিছুদিন পরে আবার বাকি ৫ লাখ টাকার জন্য, আমার স্বামী খাদিমুল ইসলাম তমিজ টাকার কথা বলেন, আমি আমার বাবা মাকে জানালে তারা এখন দিতে পারবে না বলে সব জানিয়ে দেন। তারপর থেকে আমার স্বামীকে ফোন করলে ফোন রিসিভ করে না এবং কেটে দেয় আমার সাথে কোন কথাই বলে না। আমি নিরুপায় হয়ে গত ২৯/৪/২০২৩ ইং তারিখে আমার শ্বশুর-শাশুড়িকে বিষয়টি জানানোর জন্য তাদের বাড়িতে যায়।

ইসরাত জাহান মিম, মোঃ আলম ও সেলিনা আক্তার অভিযোগ করে বলেন গত ২৯/৫/৪/২০২৩ ইং তারিখে, আমার মেয়ে মিমকে তারা, সন্ধ্যা অনুমান ৬ টার সময়, হুমায়ুন কবির ও তার স্ত্রী খাদিজা আক্তার মুন্নি এবং ছেলে খাদিমুল ইসলাম (তমিজ) যৌতুকের বাকি ৫ লাখ টাকা না পেয়ে, ইসরাত জাহান মিমের মাথায় কেরোসিন তেল ঢেলে দিয়ে পুড়ে ফেলানোর চেষ্টা করেন। ইসরাত জাহান মিমের বাবা আলম মিয়া আরও বলেন আমরা এই ঘটনাটি শুনে ভোলা শহর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি “নওশাদ হোসেন মন” ও আলিনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কে বিষয়টি জানালে তিনি তাৎক্ষণিক ওই ৩ নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য সহ মিমকে অজ্ঞান অবস্থায় তাদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে, ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করি।

এ ব্যাপারে মোঃ খাদিমুল ইসলাম তমিজ, খাদিজা আক্তার মুন্নি, মোঃ হুমায়ুন কবির এই তিনজনকে আসামি করে ভোলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের একটি মামলা হয়েছে আদালত ভোলা সদর থানাকে মামলা তদন্ত করে আসামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। মামলার নং জি, আর ২৫৭/ ২৩ ইং ( ভোলা)
তমিজের বিরুদ্ধে আরেকটি যৌতুক মামলার নং সি,আর ২২৭/২৩ ইং (ভোলা)

ভুক্তভোগী ও তার পরিবার প্রশাসনের কাছে আসামী দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানোর জন্য হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *