ভোলা বোরহাউদ্দিনের গঙ্গাপুর ইউনিয়নে যৌতুক মামলা তুলে নিতে বাদীর বাড়ীতে আসামীর হামলা


স্টাফ রিপোর্টার।


একবার মাইরে কাম অয়নাই,আরো মাইর লাগবো।আবার কোর্টে যাইলে এইবার হেইখানেই মাইরা ফালামু। এমন হুমকি দিয়ে যৌতুক মামলা দেয়ায় স্ত্রী ও শাশুড়ীর উপর অতর্কিত হামলা চালালো আসামীর নেতৃত্ব ক্যাডাররা।
শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার গঙ্গাপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ধাণীভাঙ্গা গ্রামের মৃত মজিবল হক গাজী মিয়ার বাড়ীতে এঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলার বাদীনি- সুমাইয়া বেগম জানান,শুক্রবার দিনগত রাতে তার স্বামী ১নং আসামী শাকিল’সহ ৩/৪জনের সন্ত্রাসী নিয়ে এশার নামাজের পর তাদের বাড়ীতে আসেন। সেখানে গিয়ে তারা সুমাইয়াকে অপহরন করে নিয়ে যেতে টানা হেচড়া করতে থাকে। এসময় সুমাইয়ার মা’ কহিনুর বেগম জামাই শাকিল ও তার গুন্ডাবাহিনীর হাত থেকে মেয়েকে রক্ষার জন্য এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা তাকে বেধড়ক মারধর করে। মা’কে রক্ষার চেষ্টা করলে মেয়ে সুমাইয়াকেও দুর্বৃত্তরা পিটিয়ে আহত করে। এসমময় মা-মেয়ের ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে ক্যাডাররা পালিয়ে যায়।
ভিক্টিম সুমাইয়ার মা’কহিনুর বেগম জানান,বোরহানউদ্দিন উপজেলাধীন মানিকা ইউনিয়ন ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা লালমিয়ার পুত্র মো:শাকিলের কাছে তার মেয়ে সুমাইয়া’কে বিয়ে দেয়ার পর থেকেই শশুর বাড়ীর লোকেরা মেয়েকে যৌতুকের দাবীতে শারীরীক ও মানুষিক নির্যাতন চালাতে থাকেন। এক পর্যায়ে মেয়ের সুখের দিক বিবেচনা করে জামাইকে ধারদেনা করে দেড়লাখ টাকা দেন কহিনুর বেগম। কিন্তু তাতেও জামাই শাকিলের চাহিদা মেটেনি। এরপর যৌতুকের আরো টাকার দাবীতে স্ত্রী সুমাইয়ার উপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। স্বামী ও শশুর বাড়ীর লোকদের নির্যাতন সইতে না পেরে নিরুপায় স্ত্রী সুমাইয়া চলতি বছরের জুন মাসে স্বামী শাকিলের বিরুদ্ধে বোরহানউদ্দিন সিনিয়র জুডিশিয়াল বিচারিক হাকিমের আদালতে একটি যৌতুক মামলা (যারনং সিআর-১৭৫/২৩) দায়ের করেন। ওই মামলাটি আমলে নিয়ে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক”মো:বায়েজিদ”আসামীর প্রতি সমন ইস্যু করেন। মামলার বাদী ভিক্টিম সুমাইয়া জানান,বিগত ২২ জুলাই মামলার নির্ধারিত তারিখের দিন আসামী শাকিল কোর্টে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিষয়টির মিমাংসার শর্তে বিচারক আসামীকে জামিন দেন। কিন্তু জামিন পেয়ে কোর্ট অভ্যন্তরে ক্ষিপ্ত শাকিল তার স্ত্রী সুমাইয়াকে বেধড়ক মারধর করে। এসময় আসামীর সঙ্গীয়রা বাদীনি সুমাইয়ার ভগ্নিপতি,
রহিজলকারী-কেও পিটিয়ে জখম করে। এ মামলার কৌশলী এ্যাড.ত্ব-হা গণমাধ্যমকে জানান,ওইদিন ঘটনার পরপরই তিনি কোর্টের বিচারককে হামলার বিষয়টি অবহিত করেন।
পরবর্তীতে গত ২০ আগষ্ট মামলার ধার্য্য তারিখে হামলার ঘটনায় তিনি কোর্টের বিচারকের কাছে আসামীর জামিন বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারক কেনো আসামী শাকিলের জামিন বাতিল করা হবেনা এমর্মে কারন দর্শাতে আসামীপক্ষের আইনজীবী রিপন মিয়াকে নির্দেশদেন। কিন্তু কোর্টের এমন ফরমান জারি থাকলেও সেটিকে তোয়াক্কা না করে আসামী শাকিলের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা মামলার বাদীনিসহ তার মায়ের উপর এভাবে হামলার ঘটনাটি খুবই দূ:খজনক বলে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন, বাদীর আইনজীবী ত্ব-হা মিয়া।
এদিকে মামলার আসামী কর্তৃক বাদীর পরিবারের উপর হামলার ঘটনার পর তারা এখন চরম আতঙ্ক,উদ্বেগ আর উৎকন্ঠায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন,সুমাইয়া’র মা’ কহিনুর বেগম। তিনি এখন মেয়েকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে গণমাধ্যমের কাছে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এঘটনায় ব্যবস্থা নিতে তিনি সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারকের কাছে ন্যায়বিচার ও আইনী সহায়তা চেয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *