ভোলা বোরহানউদ্দিনে গৃহবধূকে পিটিয়ে জখম” অতঃপর হত্যার চেষ্টা

ভোলা বোরহানউদ্দিনে গৃহবধূকে পিটিয়ে জখম” অতঃপর হত্যার চেষ্টা

বোরহানউদ্দিন (ভোলা) প্রতিনিধিঃ

ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডে দালালপুর গ্রামের মফিজ উদ্দিন হওলাদার বাড়িতে মামুনের স্ত্রী সুমি আক্তার নামক এক অসহায় গৃহবধুকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে। পরে তাকে হত্যা চেষ্টা চালানো হয়। ওই বাড়ির হাবিবুল্লার ছেলে তার স্বামী মামুনের নির্দেশে শাশুড়ি রাজিয়া সুলতানা, মামুনের ভাই বিপ্লবের স্ত্রী নাজমা,মামা শশুর আব্দুর রব ও মামুনের খালাত ভাই জিসান অসহায় সুমিকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে হত্যার চেষ্টাও চালায় তারা। বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ৮ টায় এ ঘটনা ঘটে।
পরে স্থানীয় সাংবাদিক ও স্থানীয় চেয়ারম্যান মোঃ জসিম উদ্দিন হাওলাদারসহ ইউপি সদস্য পারভেজ ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় সুমিকে উদ্ধার করে বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি করেন। আহত সুমি জানান, তার বাবার গ্রামের বাড়ি লক্ষীপুর জেলার কমলনগর উপজেলার চরকালকিনি ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের আব্দুল জব্বারের মেয়ে তিনি। চট্রগ্রাম পাহারতলী উপজেলার পশ্চিম নাসিরাবাদ ইউনিয়নের ১২ নং শরাই পাড়ার বাচা মিয়ার রোর্ড এলাকায় ব্যাংক কলোনী মতিন সাহেবের বিল্ডিংয়ে ভাড়া থাকতেন তারা। সেখানে মামুন একটি কোম্পানিতে চাকুরী করত ও পাশাপাশি তাদের পাশে ভাড়াবাসায় থাকত মামুন। সেখানে সুমি ও মামুনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে ৫ লক্ষ টাকা কাবিননামা দিয়ে সুমিকে বিবাহ করে মামুন। দীর্ঘ ১ বছর সংসার সুমি ও মামুনের। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে সুমির বাসা থেকে স্বর্ণালংকার ও নগদ ১ লক্ষ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায় মামুন। পরে মামুনকে খুঁজতে তার বাবার বাড়ি বোরহানউদ্দিনে চলে আসেন সুমি। টবগী ইউনিয়ন পরিষদে বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরকে জানান সুমি। চেয়ারম্যান জসিম হাওলাদার মামুনের পরিবার ও সুমিকে নিয়ে মিমাংসার জন্য টবগী ইউনিয়ন পরিষদে দুই পক্ষের কথা শোনেন। পরে মামুনের প্রথম স্ত্রী রয়েছে বলে জানতে পারেন সুমি। তবে মামুন নিখোঁজ বলে শালিশ বৈঠক এরিয়ে যায় মামুনের পরিবার। চট্রগ্রাম থেকে আসা সুমি নিরুপায় হয়ে তার স্বামী মামুনের বাড়িতে আশ্রয় নিতে যায়। সেখানে মামুনকে দেখতে পায় সুমি। পরে মামুন ভোঁদৌড় দেয়। বৃহস্পতিবার রাতেই সুমিকে পিটিয়ে গুরুতর জখম ও হত্যার চেষ্টা চালায় তারা। ঘটনাস্থলে গিয়ে সাংবাদিকদের সামনে হামলাকারী আব্দুর রবের কাছ থেকে আহত সুমির মোবাইলটি উদ্ধার করেন চেয়ারম্যান জসিম হাওলাদার। টবগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম হাওলাদার জানান, সুমি ও মামুনের বিয়ের কাবিননামা দেখেছি। তাদের বিবাহ হয়েছে। মামুন উপস্থিত না হওয়ায় বিষয়টি মিমাংসা করা হয়নি। তবে মামুনসহ সুমি মামুনের মায়ের কাছে গেলে তারা মেনে নিবেন বলে মামুনের মা আমাকে বলেছে। অন্যদিকে মামুনের মা রাজিয়া সুলতানা জানান, আমার ছেলে সুমিকে বিবাহ করেছে। সুমিকে নিয়ে চট্টগ্রাম বাসাভাড়া থাকত মামুন। মামুনের প্রথম স্ত্রী ও সন্তান আছে। আমরা এখন মামুনকে খুঁজে পাইনা। মামুনের সাথে আমাদের যোগাযোগ নেই। তবে মামুনের প্রথম স্ত্রীর বাড়ি খুলনা। সেখানে দীর্ঘ ৩ বছর যাবত তার প্রথম স্ত্রী তার বাবার বাড়িতে থাকেন। তিনি আরো বলেন, সুমি ও মামুন একহয়ে আসলে আমি তাদেরকে আমার ঘরে প্রবেশ করতে দিব। বোরহানউদ্দিন থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহিন ফকির (বিপিএম) জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ছবি সংযুক্ত- প্রথম ছবি, বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে আহত সুমি। দ্বীতীয় ছবি, ঘটনাস্থল থেকে চেয়ারম্যান, সাংবাদিক, স্থানীয় মেম্বারসহ স্থানীয়রা আহত সুমিকে উদ্ধার করার সময় তোলা ছবি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *