চাঁদাবাজি”জুলুম বন্ধে ন্যায়বিচারের অঙ্গীকারঃ ডা:শফিকুর রহমান

বিশেষ প্রতিনিধি।


বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আমির ড. শফিকুর রহমান দেশব্যাপী সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে সৎ ও ন্যায়পরায়ণ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) দিনাজপুরের গৌর এ শহীদ বড় ময়দানে অনুষ্ঠিত ‘কর্মী সম্মেলন-২০২৫’-এ প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তিনি। তার কথায় উঠে এসেছে ন্যায়বিচার, মানবিকতা এবং দেশগঠনের জন্য প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক শুদ্ধাচারের তাগিদ।

ডা: শফিকুর রহমান বলেন, “ক্ষমতা দেওয়া ও কেড়ে নেওয়ার একমাত্র মালিক আল্লাহ। রাজনীতি যারা করেন, তাদের উচিত শহীদদের ত্যাগের প্রতি সম্মান দেখানো। চাঁদাবাজি, ঘুষ এবং দখল বাণিজ্যের মতো অন্যায় কার্যকলাপ বন্ধ করতে হবে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ছাড়া কোনো উন্নয়নই টেকসই হতে পারে না।”

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সরকারের ব্যর্থতার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণে বাধা দেওয়া হয়েছে, যা মানুষের প্রতি সরকারের দায়বদ্ধতার অভাবকে স্পষ্ট করেছে। উন্নয়নের নামে লুটপাট ও দুর্নীতি বর্তমানে স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হয়েছে। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে একটি মানবিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার শপথ নিয়েছি।”

২০২৪ সালের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও গণআন্দোলনের পরিসংখ্যান তুলে ধরে ড. শফিক বলেন, “গত বছর গণআন্দোলনে ৩৪ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন, ৫০২ জন চিরতরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন এবং শতাধিক ব্যক্তি পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। এই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।”

সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামী উত্তরবঙ্গে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় গৃহীত পদক্ষেপগুলোর কথা উল্লেখ করেন। বিরামপুর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ শিশির কুমার সরকার ও নিতাই চন্দ্র দেবনাথ জানান, “২০২৪ সালের সংকটময় মুহূর্তে জামায়াত আমাদের পাশে ছিল। তাদের দেওয়া নিরাপত্তা প্রশংসনীয়। ভবিষ্যতেও আমরা তাদের পাশে থাকার প্রত্যাশা রাখি।”

ড. শফিক বলেন, “আমরা একটি বৈষম্যহীন সমাজ চাই, যেখানে চুরি, খুন এবং ধর্ষণের মতো অপরাধ থাকবে না। যুবসমাজ জাতির ভিত্তি। তাদের সঙ্গে নিয়ে আমরা যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত।”

অনুষ্ঠানে দিনাজপুর জেলা জামায়াতের সভাপতি অধ্যক্ষ মো. আনিসুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিমসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। দিনাজপুরসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার গণআন্দোলনের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য এবং ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও সম্মেলনে অংশ নেন।

সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে জামায়াত আমির বলেন, “আমাদের লক্ষ্য একটি মানবিক সমাজ গড়ে তোলা, যেখানে অন্যায়-অবিচার ও বৈষম্যের স্থান থাকবে না। সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *