
প্রসূতি আফরোজা আক্তারের (২৪) অভিযোগ, অপারেশন টেবিলে তার গায়ে হাত তুলেছে নার্স। খারাপ আচারণ করছে ডাক্তারাও। অপারেশনের পরও পেট সিলাই না করে রেখেছিল প্রায় একঘন্টা। এরপরে টিউমার রেখেই পেট সিলাই করে চলে যান। পেটের ব্যাথা অসয্য করতেছে, শুয়ে-বসে থাকতে খুব কষ্ট হচ্ছে। ডাক্তার আমার সাথে এমন করলো কেন, আমরা তাগো কি ক্ষতি করছিলাম। একবার সন্তানের জন্য পেক কাটতে হইল, আবার টিউমারের জন্য কাটতে হইবো। মনে ডাক্তাররা আমারে মাইরা ফালাইব। অপারেশনের মানুষ তো এমনেই অর্ধেক মরা।
বাবা মোহাম্মদ মাসুদ মিয়া জানান,অন্তসত্ত্বার আড়াই মাসের মধ্যে আলট্রা করে মেয়ে আফরোজা। তখন তার পেটে টিউমার ধরা এবং টিউমারের জন্য ঔষুধ খেতে শুরু করে। সময় সুযোগ মতো আপারেশন করাতে বলেছিলে ডাক্তার। এরমধ্যে তো গত শুক্রবার রাতে হঠাৎ মেয়ের প্রসব বেদনা উঠলে তাকে ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সিজারের পর টিউমার টিউমার অপারেশনের ডাক্তার আর ক্লিনিকের লোককে অনুরোধ করেও টিউমার অপারেশন করাইতে পারলাম না। আমি বলছিলাম সকালে টাকা দিয়া দিমু, তার করলো না হারামিরা। অপারেশন করতে তাগো কি ক্ষতি হইতো।
স্বামী নাঈম ইসলাম জানান,আমি বেসরকরি ঔষুধ কম্পানি ইনসেপটায় শ্রমিকের কাজ করি। সব সময় হাতে টাকা থাকে না। স্ত্রী অন্তসত্ত্বা হওয়ায় কষ্ট করে বিকাশে কিছু টাকা রাখছিলাম। কিন্তু সেই টাকাও কাজে লাগলো না। টিউমার অপারেশনের জন্য আমি আর আমার শ্বশুর অনেক অনুরোধ করেছি কিন্তু কেউ আমাগো অনুরোধ রাখলো না। যার কারনে আমার স্ত্রী এখন পেট ব্যথায় মরতেছে। ব্যাথায় কান্না করতেছে। আমার স্ত্রীর কিছু হইলে ক্লিনিক আর ডাক্তারের নামে মামলা দিমু।
তিনি আরও বলেন, পারিবারিকভাবে ২০১৭ সালের বিয়ে হয় তাদের। সংসার জীবনে ৩ বছরের একটি কন্যা সন্তানও আছে। শুক্রবার রাতে তাদের আরেকটা কন্যা সন্তান হয়। আমি বাইরে কাজ করি আর স্ত্রী বাড়িতে সংসার করে। অভাব অনটনের মধ্যে কোন রকমের দিন কাটে আমাগো।
হেলথ কেয়ার মেডিকেল সেন্টার ক্লিনিকের ম্যানাজার মো.হাবিবুর রহমানের দাবি, আমাদের ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কোন অবহেলা নেই। আমরা তো ডাক্তারকে ফোন দিয়ে আনছি এবং অপারেশন করাইছি। সেই সাথে টিউমার অপারেশনের জন্য ডাক্তারকে টাকাও দিয়েছি। ডাক্তার যদি অপারেশন না করে, তাহলে আমাদের কি করার।
অভিযুক্তি ডাক্তার খাইরুল হাসানের দাবি,একটা অপারেশনের কথা ছিল, তাই একটা করছি। পরে টিউমারের জন্য আদালা টাকার কথা বলি। কিন্তু টাকা দিতে না পারায় তাকে অপারেশন করা হয় নাই।