পানিনিষ্কাশনের খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় পাঁচ শতাধিক কৃষকের মাথায় হাত

পানিনিষ্কাশনের খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় পাঁচ শতাধিক কৃষকের মাথায় হাত

মোঃ ফরিদ উদ্দিন, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানাধীন ৯নং চর মানিকা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডস্থ,চর মানিকা সুলিজ খাল হইতে ফরাজি বাড়ীর পুর্ব পাশ দিয়া উলানিয়া কান্দা ও ময়না বাজার হইয়া পুর্বের বেঁড়ী পর্যন্ত পানি নিষ্কাশনের খাল বিদ্যমান।

যাহার দুই পাশে পাঁচ শতাধিক একর জমি রহিয়াছে।খালটি সরকারের ১নং খতিয়ানে পানি নিষ্কাশনের খাল হিসেবে বিদ্যমান আছে।

মৃত.হারিছ আহম্মেদ গং এবং মৃত.মফিজুল ইসলাম গং পানি নিষ্কাশনের খালকে নাল ভুমি দেখাইয়া মিথ্যা বন্দোবস্ত সৃজন করেন।

যাহার কেইস নং ৬০৬ এফ/২০০০-২০০১ ইং ও ১৪৯৭ এফ /২০০০-২০০১ ইং,যাহার বন্দোবস্ত খতিয়ান নং ৫২৩ ও ৫৩২ সৃজন করে খালের ভিতরে বাঁধ নির্মাণ করে ৬/৭ টি মাছ চাষের ঘের সৃষ্টি করে মাছ চাষ করে।

১/ মৃত.হারিছ আহমেদ ফরাজী অত্র বিরোধীয় বন্দোবস্ত খতিয়ানে হারিছ নামে পরিচিত।পিতা/মাতার সম্পত্তি ব্যাতিত ৮/১০ টি খতিয়ানে প্রায় ১০/১২ একর সম্পত্তির মালিক মৃত.হারিছ।

২/ মৃত.মফিজুল ইসলাম চরফ্যাশন উপজেলার শশীভুষন থানার স্থায়ী বাসিন্দা।তিনি বন্দোবস্ত কার্ডের দালাল হিসেবে পরিচিত।

পৈত্রিক সূত্রে মালিক ছাড়াও তাহার স্বনামে-বেনামে অনেক বন্দোবস্তীয় কার্ড আছে।কার্ডের দালালী তাহার নেশা-পেশা ছিলো।

বিরোধীয় ৫২৩ নং বন্দোবস্তীয় খতিয়ানটি সৃষ্টি হওয়ার পর নোটারী মুলে মৃত.হারিছ আহমেদের কাছে মৃত.মফিজুল ইসলাম এ সম্পত্তি বিক্রি করেন।

সরকারের ১নং খতিয়ানে পানি নিষ্কাশনের খালটিতে বাঁধ নির্মাণ করে মাছের ঘের সৃষ্টি করে মাছ চাষ করে।এবং বাঁধ দিয়ে জলাবদ্ধতা সুষ্টি করে জাল পেতে মাছ ধরে।এতে প্রায় পাঁচশ একর জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির ফলে শত শত কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এনিয়ে ২০০৭- ২০০৮ সালে সচেতন কৃষকগণের মধ্যে ক্ষতির সমস্যা দেখা দিলে বন্দোবস্ত কেইস ও খালের মধ্যকার ঘের বাতিলের দাবির ব্যাপারে উদ্যোগ নিলে মৃত.হারিছ আহম্মেদ ফরাজী ও মফিজুল ইসলাম গং বাদী হয়ে উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে পাঁচটি মিথ্যা মামলা করে।যাহা মামলা নং..

১/ফৌজদারী মামলা নং ৮২৭/২০০৮,ভোলা, তাং-১৩/১১/২০০৮ ইং,
২/সাত ধারা মামলা নং-৩৭০/২০০৮,ভোলা,তাং-২২/১১/২০০৮ ইং।
৩/সি,আর মামলা নং-৯০৩/২০০৮ ইং,ভোলা।
৪/সি,আর মামলা নং- ৭২/২০০৮ ইং,ভোলা।
৫/ভোলা পুলিশ সুপার কার্যালয়,অভিযোগ নং-১১২৭/৫,তাং-০৮/০৫/২০০৮ ইং।

মৃত.হারিছ আহম্মেদ গং ও মৃত.মফিজুল ইসলাম গং দের বিভিন্ন মামলা ও বিভিন্ন অত্যাচারে উদ্যোক্তাদের অনেকেই এলাকা ত্যাগ করেন।

যাদের মধ্যে উল্লেখ যোগ্যঃ
১/মাষ্টার মোঃ ফয়েজ আহম্মেদ পিতা, মৃত. আব্দুল বারেক হাং,তিনি উত্তর চর মানিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক ছিলেন।বর্তমানে পটুয়াখালী জেলার উলানিয়া থানার উলানিয়া গ্রামে বাস করেন।
২/ মোঃ ইসমাইল মৃর্ধা,পিতা মৃত.আছমত আলী মৃর্ধাসহ আরও অনেকে এলাকা ত্যাগ করেন।সর্ব সাং উত্তর চরমানিকা ২নং ওয়ার্ড,দক্ষিণ আইচা,চরফ্যাশন, ভোলা।

মৃত.হারিছ আহম্মেদ গং এর মৃত্যুতে নিম্মোক্ত ১ হইতে ৪ নং ব্যাক্তিগন ভোগ দখলে বিদ্যমান আছে।

১/মোঃ কবির ফরাজী।
২/মোঃনিজাম ফরাজী।
৩/মোসাঃ রহিমা বেগম।
৪/মোসাঃ ফাহিমা বেগম।

সর্ব পিতা, মৃত.হারিছ আহমেদ ফরাজী,সর্ব সাং- উত্তর চরমানিকা,২নং ওয়ার্ড,দক্ষিণ আইচা ভোলা।

মৃত.মফিজুল ইসলাম এর মৃত্যুতে নিম্নোক্ত ৫ হইতে ১০ নং ব্যাক্তিগন ভোগ দখলে বিদ্যমান আছে।

৫/মোসাঃ শাহীনুর বেগম,স্বামী.মৃত মফিজুল ইসলাম।

৬/মোঃ মনির।
৭/মোঃ ইব্রাহিম।
৮/মোঃ বসার।
৯/মোসাঃ কুলসুম।
১০/মোসাঃ আসমা।

সর্ব পিতা,মৃত.মোঃমফিজুল ইসলাম। সর্ব সাং-উত্তর আইচা ৯নং ওয়ার্ড,পোঃ উত্তর আইচা, থানা-শশীভূষন,জেলা ভোলা।

সরেজমিনে গেলে,স্থানীয় জৈনক ছানু মিয়া,পিতা মোজাম্মেল হক ও মোঃ মীর হোসেন,পিতা মৃত.হাসেম আকন বলেন,মৃত হারিছ আহমেদের ছেলে কবির,নিজাম,মেয়ে রহিমা বেগমের স্বামী মোঃ ছালাম এই বন্দোবস্তীয় জমি সম্পর্কে কেউ কথা বললে অকথ্য,অশ্লীল ভাষায় গাল-মন্দ করে।

স্থানীয় সালিশ,সার্ভেয়ার বিষয়টি সমাধানের ব্যাপারে আসলে কবির,নিজাম,ছালাম অপকৌশলে পরিমাপের কথা বলে।তাদের কথা মত পরিমাপ না করলে সামাজিক ব্যাক্তিত্ব সালিশ ও সার্ভেয়ারদের সাথেও অসৈজন্যমূলক আচরন করে।এমন অনেক প্রমান বিদ্যমান।

১১৮ নং জে.এল ভুক্ত উত্তর চর মানিকা মৌজার বন্দোবস্ত খতিয়ান নং-৫২৩ ও ৫৩২,দিয়ারা দাগ নং ২১৭৫,২১৭৬ যাহা বাংলাদেশ সরকারের ১নং খতিয়ানের খালকে নাল দেখিয়ে অবৈধভাবে বন্দোবস্ত নিয়ে প্রায় পাঁচশ একর জমির পানিনিষ্কাশনের খালে বাঁধ নির্মান করে ঘের করে,মাছ চাষ করেন।

প্রতি বছর জলাবদ্ধতায় পাঁচ শতাধিক কৃষকের জমি অতি বৃষ্টিতে তলিয়ে যায়।
কৃষকরা বর্ষার মৌসুমে জলাবদ্ধতার কারনে বীজ তলা তৈরী,অতিবৃষ্টিতে ফসল নষ্ট ও বোরো মৌসুমে পানি সেচের অভাবে বোরো চাষে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

স্থানীয় শত শত ভূক্তভোগী কৃষক জানান,হারিছ ফরাজী জীবিত থাকা কালীন কৃষক ও গ্রামবাসীরা সরকারী খাল উদ্ধারে বার বার উদ্যোগ নিলেও আমাদেরকে একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে,খুন,জখম এর ভয় দেখানোর কারনে আমরা বাড়াবাড়ি না করে প্রতি বছর জলাবদ্ধতায় ফসলহানীর কবলে মানবেতর জীবনযাপন করছি।

বাঁধের কারনে পানি অপসারণ না হওয়া, বৃষ্টির সময় পানির গতিপ্রবাহ বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়ে কয়েক হাজার বাসিন্দা। তলিয়ে যায় কৃষি জমি।

ভুক্তভোগী কৃষক ও স্থানীয় বাসিন্দারা প্রতি বছর প্রতিকার চেয়ে কোন সুফল পাচ্ছেনা।

স্থানীয় শতশত কৃষকের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি সরকারি খালটি অবৈধ বন্দোবস্ত সৃজনকৃত জে,এল নং-১১৮, কেইস নং ৬০৬ এফ/২০০০-২০০১ ইং ও ১৪৯৭ এফ ২০০০-২০০১ ইং।

দুটি মোকদ্দমা ও তৎমুলে সৃজিত খতিয়ান নং ৫২৩,দাগ নং- ২১৯০,২১৯৭,২১৯৮ ও খতিয়ান নং ৫৩২,দাগ নং-২১৭৫,২১৭৬ বন্দোবস্তীয় খতিয়ান দুটি বাতিল করে এলাকার শত শত কৃষকের কৃষি ক্ষতি থেকে বাঁচানোর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *