
মোঃ ফরিদ উদ্দিন,বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ভারতকে ইলিশ দেওয়া উচিত নয় বাংলাদেশের।বলাবলি হচ্ছে ভারতকে ইলিশ দিতে গিয়ে ফেঁসে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
ইলিশ না দিলে ভারত থেকে বাংলাদেশে রপ্তানি হওয়া কিকি পন্য আটকে দিতে পারে ভারত।যাতে বেজায় সংকটে পড়তে হতে পারে বাংলাদেশকে।
দুদেশের কুটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে চলে যেতে পারে।এই ইলিশ রপ্তানি বন্ধ হলে।
ইলিশ রপ্তানি বন্ধ হলে বিপাকে পড়বে হাসিনা।কারন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই ইলিশ সংকট খুবই গুরুত্বপূর্ণ সংকটে পরিনত হতে যাচ্ছে আগামীদিনে।
আইনি নোটিশ পাওয়ার পর ভারতে আইনি শুদ্ধি পাকাপাকি ইলিশ রপ্তানি বাংলাদেশ বন্ধ করে দিবে কিনা তা স্পষ্ট করেনি দেশটির সরকার।
বাংলাদেশের বাজারে ইলিশের দাম চড়া হচ্ছে। ভারতে কম রপ্তানি মূল্যে ইলিশ রপ্তানির জন্য।তা সহ্য করতে নারাজ দেশটির সাধারণ মানুষও।
দেশের বাজারে টান আর ভারত প্রিতি সহ্য হচ্ছেনা বাংলাদেশের অনেকের।দেশের মানুষের চাহিদা না মিটিয়ে কেন ভারতকে দেওয়া হবে টমটম ইলিশ? এতেই আপত্তি উঠেছে দেশটির অন্তরে।
এদিকে ভারত সফরে এসে হাসিনা ভারতকে দিয়ে ফেলেছেন অনেক গুলো কথা।ইলিশ পাঠিয়ে দিয়েছেন কথামত।কিন্তু বাংলাদেশের একাংশের ক্ষোভ ভারত যদি তিস্তার পানি না দেয়,অন্য পন্য আটকে রাখে,তাহলে ইলিশও দেওয়া যাবেনা ভারতকে।
কারন এতে বাংলাদেশের বাজারে রুপালী সস্যের খরা দেখা দিচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হলো ভারত যদি ইলিশ না পায়,তাহলে একটা সার্বিক ক্ষোভতো ভারতের মানুষেরও তৈরী হবে।
পশ্চিমবঙ্গ ফিস ইম্পোর্টার এসোসিয়েশন বাংলাদেশে রুইকাতলাসহ অন্যান্য মাছ রপ্তানি বন্ধ করে দিতে পারে তা নিয়ে সংসয় তৈরী হতে পারে।
ভারত থেকে বাংলাদেশে রুইকাতলাসহ অন্যান্য মাছ রপ্তানি যেকোন সময় বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।আর এতেই বেজায় সংকটে পড়তে হতে পারে বাংলাদেশেরেই।
প্রতি বছরই দূর্গাপূজার সময় নিয়ম করে ভারতে ইলিশ এসেছে বাংলাদেশ হতে।কিন্তু দেশটির বুদ্ধিজীবীরা বলেছিলেন তিস্তাচুক্তি না করা পর্যন্ত ভারতকে ইলিশ দেওয়া যাবেনা।
২০১২ সালের পর থেকে শেখ হাসিনা নিজেও ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করেছিলেন।বলেছিলেন পানি আসলে মাছও যাবে।
প্রায় সাত বছর ইলিশ দেয়নি ভারতকে বাংলাদেশ। ২০১৯ সাল থেকে আবার বাংলাদেশ ইলিশ দেওয়া শুরু করে ভারতকে।
বাংলাদেশ বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ইলিশ উৎপাদনকারী দেশ।ভারতে ইলিশ পাঠিয়ে ভালো অর্থ আয় করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের এই সময় ফরেন কারেন্সি বেশী প্রয়োজন।
দুদেশের মধ্যেকার সম্পর্কে সেতুবন্ধনে ইলিশ কুটনৈতি ব্যাবহার করে চলেছেন শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ- ভারতের মধ্যে গঙ্গার পানি চুক্তি সম্পাদনের আগে ১৯৯৬ সালে প্রথম শেখ হাসিনা তৎকালীন ভারতের মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতিবসুর জন্য ইলিশ উপহার ব্যাবহার করেছিলেন।
২০১০ সালে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী তখনও ইলিশ উপহারই দিয়েছিলেন হাসিনা।
হাসিনা ভারতের সাথে কুটনৈতিক সম্পর্ক মজবুত করেছেন ইলিশ মাছ দিয়ে দিয়ে।এতে খুশি হয়েছে ভারতও।
আগে প্রতিবছর ভারতে ইলিশ ৫০০ টন করে যেত।পরে অবশ্য আরও বেশি বাড়ানো হয়।এতে বাংলাদেশের বাজারে ইলিশের সংকট তৈরী হচ্ছে।তা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেনা দেশের আমজনতা।
বাংলাদেশের ক্ষোব ভারত অনেক সময় নিজের দেশের চাহিদা মেটাতে পন্য আটকে রাখে।
ভারতের পিয়াঁজ,গম,চাল ছাড়া বাংলাদেশের চলেনা।কিছু দিন আগে পন্য আটকে দিয়েছিল ভারত।কারন ভারতে চাহিদা দেখা দিয়েছিল বিশেষ মাত্রায়।
ভারতে পিয়াঁজের আকাল দেখা দিয়েছিল তাই ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছিলেন। আর এতে বাংলাদেশকে তীব্র সংকটে পড়তে হয়।
হাসিনা ভারতে সফরে মোদির সাথে কথা হয় বাংলাদেশের যে পন্য ভারতের দরকার হয় তা আগে জানাতে হবে।
বাংলাদেশকে ভারত পন্য দিবে,কিন্ত ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করে দিলে ভারততো বাংলাদেশের দরকারী পন্য দিবেনা। তখন বিপাকে পড়তে হতে পারে শেখ হাসিনাকে।
রপ্তানি বন্ধ হলে সীমান্তে ইলিশ চোরাচালান বাড়বে।ভারত ইলিশ না পেলে পিয়াঁজ রপ্তানি ও বন্ধ করে দিতে পারে ভারত।
এর আগে যখন বাংলাদেশ ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছিলেন সে সময় দ্যা হিন্দুস্থান টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, প্রয়োজন হলে ভারত আবারও পিয়াঁজ রপ্তানি বন্ধ করে দিতে পারে বাংলাদেশে।
ভারতকে ইলিশ না দিলে,পিয়াঁজ ছাড়া তরকারী হবেনা বাংলাদেশে।ভারত থেকে পিয়াঁজ না পেলে মিয়ানমার থেকে পিয়াঁজ আমদানি করতে হবে বাংলাদেশকে।
কিন্তু মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের অবস্থা এখন একেবারেই ভালো নয়।তাহলে মোটামুটি বুঝা যায় বাংলাদেশ ইলিশ রপ্তানি বন্ধ হলে পিয়াঁজ সংকট এবং অন্যান্য পন্য সংকটে পড়তে হতে পারে বাংলাদেশকে।