রিপোর্টঃ আবুল কালাম আজাদ।
ভোলা সদর উপজেলার চর স্যামাইয়া ৯নং ওয়ার্ডের নুরুল ইসলামের ছেলে গরু ব্যবসায়ী মামলাবাজ জসিমের বিরুদ্ধে এলাকার বিভিন্ন সাধারণ মানুষের নামে বেনামে মিথ্যা মামলা দিয়ে বানিজ্য করার অভিযোগ। ভুক্তভোগী জুয়েল জানান,আমি একজন কশাই,গরুর গোস্ত বিক্রী করে কোন রকম সংসার চালাই। এ সুবাধে গরু ব্যাবসায়ী জসিমের সাথে আমার পরিচয় হয়। দীর্ঘদিন ধরে তার কাজ থেকে আমি গরু এনে গোস্ত বিক্রী করি। তার সাথেও আমার পরিবারের সকলের সাথে একটি সু'সম্পর্ক হয়। প্রায় সময় জসিম আমাদের বাড়ীতে আসে এবং খাবার খায়। বর্তমান বাজারে গরুর দাম চওড়া হওয়ার কারনে আমার ব্যবসায় লোকসান দেখা দেয়। জসিম আমার কাছে কিছু টাকা পাওনা হয়। জসিমের ওই পাওনা টাকা দেওয়ার ব্যাপারে আমার স্ত্রী লিপি বেগম তার কাছে আমার পক্ষ হয়ে সময় চায়। এক পর্যায় জসিম আমার স্ত্রী লিপিকে এনজিও থেকে একটি ঋণ করে দেওয়ার আশ্বস্ত করেন। আমার স্ত্রী লিপি বেগম তার কথায় একমত হয়। জসিম সু'কৌশলে ঋণের কথা বলে আমার স্ত্রী লিপির কাছে ব্যাংকের চেক দাবী করেন। জসিম বলেন,ঋণ করতে হলে ব্যাংকের চেক তাদেরকে দেওয়া লাগবে। আমার স্ত্রী জসিমকে বিশ্বাস করে জনতা ব্যাংকে তার নামে থাকা একান্ডের একটি চেক সই করে ওই চেক জসিমকে দেয়। এর পর জসিম ওই চেকে আমারও সাক্ষর নেয়,তিনি আমাকে বলে এই তুমি সই করলে কোন সমস্যা হবেনা,ঋণ করতে হলে তাদের সিস্টেম মত চেক পাতা লাগে বলে আমাকে বুঝিয়ে সই নেয়। জসিমকে আমরা বিশ্বাস করে চেক দেই ঋণ করার জন্য। কয়েকদিন অতিবাহীত হওয়ার পর তার কাছে যখন ঋণের বিষয়টি জানতে চাই তখন তিনি বলেন এনজিওর লোকদের সাথে কথা বলেছি,এক মাসের মধ্যে তুমি ঋণ পাইবা। আমি প্রতারক জসিমের কথা বিশ্বাস করে দৈয্য ধরতে থাকি। কিছুদিন যেতে না যেতেই শুনি প্রতারক জসিম ওই চেকের মাধ্যমে আমার স্ত্রী লিপি বেগমের বিরুদ্ধে ১২ লক্ষ টাকা পাওনা দাবী করে আদালতে মামলা করেন। এদিকে আরেক ব্যাবসায়ী ইব্রাহীম জানান, জসিমের সাথে আমারও দীর্ঘদিন ব্যাবসা চলমান ৮০/৯০ হাজার টাকারমত জসিম আমার কাছে পাওনা আছে। সে ইদানিং আমার কাছে ৭ লক্ষ টাকা দাবী করেন। সে আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, আমি যদি তাকে ৭ লক্ষ টাকা না দেই,তাহলে সে আমার বিরুদ্ধে আদালতে ৭ লক্ষ টাকার মামলা করবে। অপরদিকে চরস্যামাইয়া ২নং ওয়ার্ডের গোস্ত ব্যবসায়ী বাচ্ছু জানান,জসিমের সাথে আমারও ব্যবসায়ীক লেনদেন ছিল,সে আমার কাছে ৯০ হাজার টাকা পায়, আমি তার কাছে সময় চেয়েছি। সে আমাকে সময় দিয়ে এরই মধ্যে আমার বিরুদ্ধে আদালতে ৩ লক্ষ টাকার মামলা করেন। মামলার খবর পেয়ে আমি জসিমকে জিঙ্গাসা করি ভাই আপনি আমার কাছে ৯০ হাজার টাকা পাবেন,ওই টাকা দেওয়ার জন্য আমি আপনার কাছে সময় চেয়েছি,আর আপনি আমাকে সময়ও দিয়েছেন,এরই মধ্যে আপনি আমার বিরুদ্ধে আদালতে ৩ লক্ষ টাকার মামলা কেন করেছেন। জসিম আমাকে বলেন তুমি আমার ৯০ হাজার টাকা পরিশোধ কর,তবেই আমার করা মামলা আমি তুলে নেব। ওই দিনই আমি গ্রেপ্তার হই,জামিনে বের হয়ে আমি যখন জসিমের সাথে যোগাযোগ করি তিনি এখন আগের কথা ভুলে গিয়ে এখন আমার কাছে পুরো ৩ লক্ষ টাকা দাবী করেন। বাচ্ছু আরো জানান,একই এলাকার লাল মিয়ার ছেলে জাহিদের বিরুদ্ধে ও জসিম একটি মিথ্যা মামলা করেছে, চর স্যামাইয়া হোসেন মেম্বারের বিরুদ্ধেও জসিম মিথ্যা মামলা করে রফাদফার নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় এই প্রতারক জসিম। এলাকাবাসী জানান,জসিম দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের সাথে সে নিজে থেকেই সম্পর্ক তৈরি করেন। তাদেরকে জসিম জোর করে ১০/২০ হাজার টাকা কোন কাজ করার জন্য উৎসাহিত করে ধরিয়ে দেয়,বিনময়ে জসিম তাদের কাজ থেকে কৌশলে মিথ্যা বলে ব্যাংকের চেক গ্রহন করেন। ২/৩ মাস যাওয়ার পর ওই সকল নিরীহ লোকদের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ না করেই ওই চেকের দ্বারা ভোলা জজকোর্টের মহরী নুরে আলমের সহযোগিতায় মোটা অংকের টাকা পাওনা বলিয়া মামলা করেন। এই রকম একাদিক মামলার টাকার বিনিময়ে সাক্ষী হন মহরী নুরে আলম। তারা আরো জানান,জসিম এলাকার কিছু গন্যমান্যদের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে রফাদফার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তারা ভাগাভাগি করে খায়। এ ভাবেই চলছে প্রতারক জসিমের টাকা কামাইয়ের সু'কৌশল অবলম্বনে অপকর্ম। এ অপকর্ম করে জসিম এখন কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তার রয়েছে এলাকায় গন্যমান্য অনেক সহকর্মি। এলাকায় অর্ধশতাধিক নিরিহ লোকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে জসিম মামলা তুলে নেওয়ার নামে হাতিয়ে তাদের কাছ থেকে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। জসিমের করা বিভিন্ন মামলার সাক্ষী মহরী নুরে আলমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান,জসিম বিভিন্ন মানুষের নামে মামলা করেন জানি। ওই মামলার সাক্ষী আমাকে করেন,সে আমাকে কিছু টাকা দেয়। তবে তার মামলার বিবাদীগনের কাউকে আমি চিনিনা,তাদের কাছে জসিম কোন টাকা পয়সা পায় কিনা তাও আমি জানিনা। এব্যপারে মামলাবাজ জসিমের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান,যাদের বিরুদ্ধে আমি মামলা করেছি তাদের সবার কাছেই আমি টাকা পাবো বলেই জসিম এড়িয়ে যান। গরু ব্যবসায়ী, মামলাবাজ জসিমের মিথ্যা মামলার আসামীগন ও ভুক্তভোগী জুয়েলের স্ত্রী লিপি বেগম জসিমের প্রতারনাও জুলুমবাজীর হাত থেকে বাচার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।